শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বড় সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ দল। আজ লাহরে তেমন কিছু হলে বাড়তি একটি দিন ঘোরাঘুরি করে কলম্বো হয়ে দেশে ফিরতে হবে বাংলাদেশ দলকে। আজ প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। তাই বুকে হাত দিয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে গ্রুপ পর্বের দরজা আজই বন্ধ হবে না বাংলাদেশ দলের মুখের ওপর।

হার-জিতের পরিসংখ্যানে সাকিবরা এগিয়ে আছেন।

তবে সর্বশেষ ঘরের মাঠে সিরিজ হারার পর দূরের অতীত নিয়ে খুব বেশি বলার সুযোগ নেই বাংলাদেশ দলের। সঙ্গে ৩১ আগস্ট ক্যান্ডিতে শ্রীলঙ্কার অপরিণত বোলিং ইউনিটের সামনে বাংলাদেশের ব্যাটিং অহংকার যেভাবে গড়াগড়ি খেয়েছে, তাতে আফগানিস্তানের বিশ্বমানের বোলিং নিয়ে চিন্তার আকাশ দেখছেন খোদ বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে, ‘আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা। তাই নিশ্চিতভাবেই ম্যাচটা খুব চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে এই কিছুদিন আগে ওদের আমরা দেশে খেলেছি।

কিছু সাফল্যও আছে। আসলে সবটাই নির্ভর করছে নির্দিষ্ট দিনে আপনি কতটা ভালো করবেন, তার ওপর। হ্যাঁ, আমরা ওদের (আফগানিস্তান) মুখোমুখি হওয়ার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবগত আছি। ’ এই চ্যালেঞ্জ তো শুধু রশিদ খান-মুজিব উর রহমানদের সামলানোর ঝক্কিই নয়। সঙ্গে আছে এই একটি ম্যাচকে ‘লাইফলাইন’ ধরে নিয়ে খেলার স্নায়ুচাপও।

আজ হারলে এবারের এশিয়া কাপ শেষ হয়ে যাবে সাকিব আল হাসানদের। আবার জিতলেই যে সুপার ফোর নিশ্চিত—সেটিও নয়। নেট রান রেট বিবেচ্য হতেও পারে। তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় জয়ও চাই বাংলাদেশের।

এমন পরিস্থিতিতে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিয়ে বিলাসী ভাবনায় ডুব দেওয়ার সময় নেই হাতুরাসিংহের, ‘ফাইনালের আগে আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা নিয়ে ভাবছি। শ্রীলঙ্কায় যা হয়েছে, তাতে এই ম্যাচটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। (ক্যান্ডিতে) নিশ্চিতভাবেই আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। নিজেদের মেলে ধরতে পারিনি। আমরা আশাবাদী কাল (আজ) আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলব। ’

এদিকে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আফগানিস্তান ক্রিকেটের বেসরকারি মুখপাত্রই বনে গেছেন জোনাথন ট্রট! বাংলাদেশ সফরে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। আফগানিস্তানের লাহোর ক্যাম্প থেকে প্রথম শোনা গেছে এই ইংলিশ কোচের কণ্ঠ। হারলেই বাদ—এমন সমীকরণ বাংলাদেশকে মরিয়া করে তুলবে বলে মনে করছেন আফগান কোচ, ‘আমরা যদি এটা ভেবে বসে থাকি যে, এখানে (লাহোরে) আমরা বাংলাদেশের চেয়ে কয়েক দিন আগে এসে পড়ায় বাড়তি সুবিধা পাব, তাহলে বিপদ হবে। আবহাওয়া কি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি? তাই আবহাওয়া যেমনই হোক, আমাদের ওদের (বাংলাদেশ) চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। ’

এগুলো কোচদের গত্বাঁধা কথা। চোটের কারণে তামিম ইকবাল ও জ্বরাক্রান্ত লিটন দাসের অনুপস্থিতির ভোগান্তি নিয়েও হাতুরাসিংহের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিতই, ‘টপ অর্ডারে এই পরিমাণ অভিজ্ঞতার (তামিম ও লিটনের) অনুপস্থিতি অবশ্যই দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ওদের চোট আর অসুস্থতা নিয়ে তো আমাদের কিছু করার নেই। বরং এখানে যারা আছে, তাদের সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করছি। ওরা (নাঈম শেখ, তানজিদ হাসান) প্রতিভাবান বলেই দলে জায়গা পেয়েছে। ’

প্রতিভা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। ক্যান্ডিতে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সারির বোলিংয়ের সামনে যদিও সেসব প্রতিভার কোনো স্বাক্ষর তাঁরা রাখতে পারেননি। অবশ্য তরুণরা কেন, অভিজ্ঞরাও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং ভরাডুবির সমান ভাগীদার। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে তাঁরা কি পারবেন আগের ম্যাচের ভুলগুলো শুদ্ধতায় মুড়িয়ে দিতে? নইলে কিন্তু আগেই বাড়ি ফিরতে হবে!